Monday 27 April 2020

আমার পথের গল্প

জীবনে প্রথম পাহাড় দেখেছিলাম সেই কোন এক ছোটবেলায়। সে  শুধু পাহাড় দেখাই ছিল, আর পাহাড়ের সাথে বন্ধু হলাম এই তো সেদিন , বছরখানেক আগে। তারপর থেকে আমার পথ চলা, পাহাড়ের আনাচে কানাচে অলি গলিতে, নদীর ধারায়, জঙ্গলের ছায়ায়। কখনো কাঠের ঘরে, কখনো ছোট্ট টেন্ট এ, কখনো হয়তো শুধুই পাহাড়ি গুহায়। সেসব দিনের গল্প খাতায় কলমে কখনো লিখে রাখা হয়নি। আসলে অদ্ভুত এক ভালোলাগায় মুগ্ধ হয়ে থাকতাম সর্বক্ষণ, সে মুগ্ধতা আজও পিছু ছাড়েনি, আমিও পিছু ছাড়িনি পাহাড়ের।
পাহাড় আমার কাছে কেবল পাহাড়ই, স্থান কাল উচ্চতা রং ঢং  যাই হোক না কেন, আমার ভালোলাগার কোনোরকম হেরফের হয়না। তাই সুউচ্চ বরফ ঢাকা শীতল চূড়া হোক বা নদীর কোল ঘেঁষা সবুজমাখা জংলী পাহাড় বা গাছপালা শূন্য ধূসর রুক্ষ নির্মম পাহাড়, সবেতেই আমি কাঁঠালি কলা হয়ে থাকতে পারি। আসলে ওই যে কবির মতো করে বলতে হয়, যে রূপেই তুমি দাওনা ধরা, তুমিই আমার রঙ্গিনী, আমার মনোহরা।
কবিত্ব আমার সয় না, পারিও না। তাই এর বেশি আর না এগোনোই ভালো। পাহাড়ে  বেড়ানোর গল্প লিখতে গেলে কিছুতেই গুছিয়ে উঠতে পারিনা। কতটা পথ পাড়ি দিলাম, কত উচ্চতায় পা রাখলাম, এসব তথ্যগুলো সব গুলিয়ে যায়। আর গুলিয়ে যাবে নাই বা কেন, যখন এ পথে হাঁটি তখন কি আর এসব মাথায় থাকে না মনে থাকে। তখন তো শুধুই গপ্পো আর গপ্পো, নাম না জানা ফুলের সাথে, ছোট্ট ঝর্ণার সাথে, হাস্নুহানা লতার সাথে, পথ ভোলা চমরি গাই এর সাথে, কাঠ কুড়োনো ছেলেটার সাথে, আরো কত যে আছে, আসলে পাহাড়ের প্রতিটা বাঁকে আমি নতুন নতুন বন্ধু খুঁজে পাই। তাদের সাথে গল্প করতে করতে আমার পথ এগিয়ে চলে, তখন কিলোমিটার মিলিমিটার সব মিলেমিশে এক হয়ে যায়।
আর এসব কিছুর মাঝে কাছে পাই আরেকজন কে, আমার তুমি টাকে। এই তুমি ভীষণ অভিমানী, ভীষণ আদুরে, আর একরাশ ছেলেমানুষিতে ভরা। আমার যত গল্প ওই তুমি টাকে নিয়েই। পাহাড় সেখানে সব কিছুর নীরব সাক্ষী গোপাল হয়ে থাকে, আর মাঝে মাঝে মুচকি হাসিতে আমার, সরি আমাদের মন ভালো করে দেয়।
এই তুমির গল্পই শোনাবো এখানে, তবে তার জন্য আমাদের সাথে চলতে হবে, সে এক কোন অজানা পাহাড়পুরের দেশে, বোহেমিয়ানের রাজ্যে।
পথ চলা শুরু হোক